কপোতাক্ষ নদ কবিতা-লেখক মাইকেল মধুসূদন দত্ত বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে কপোতাক্ষ নদ কবিতা আবৃত্তি তুলে ধরবো। আশা করি আপনি এই কবিতা আবৃত্তি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আপনি যদি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে কপোতাক্ষ নদ কবিতার মূলভাব কি? তা বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক

কপোতাক্ষ নদ কবিতার মূলভাব

কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি কবির চতুর্দশপদী কবিতাবলি থেকে গৃহীত হয়েছে। এই কবিতায় কবির স্মৃতিকাতরতার আবরণে তাঁর অত্যুজ্জ্বল দেশপ্রেম প্রকাশিত হয়েছে। কবি যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে মধুসূদন এই নদের তীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন। যখন তিনি ফ্রান্সে বসবাস করেন, তখন জন্মভূমির শৈশব-কৈশোরের বেদনা-বিধুর স্মৃতি তাঁর মনে জাগিয়েছে কাতরতা।
কপোতাক্ষ নদ কবিতা-লেখক মাইকেল মধুসূদন দত্ত বিস্তারিত জেনে নিন
দূরে বসেও তিনি যেন কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। কত দেশে কত নদ-নদী তিনি দেখেছেন, কিন্তু জন্মভূমির এই নদ যেন মায়ের স্নেহডোরে তাঁকে বেঁধেছে, কিছুতেই তিনি তাকে ভুলতে পারেন না। কবির মনে সন্দেহ জাগে, আর কি তিনি এই নদের দেখা পাবেন! কপোতাক্ষ নদের কাছে তাঁর সবিনয় মিনতি-বন্ধুভাবে তাকে তিনি স্নেহাদরে যেমন স্মরণ করেন, কপোতাক্ষও যেন একই প্রেমভাবে তাঁকে সস্নেহে স্মরণ করে। কপোতাক্ষ নদ যেন তার স্বদেশের জন্য হৃদয়ের কাতরতা বঙ্গবাসীদের নিকট ব্যক্ত করে।

কপোতাক্ষ নদ কবিতার কবি পরিচিতি

কপোতাক্ষ নদ কবিতার লেখক মাইকেল মধুসূদন দত্ত। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে জানুযারি যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল জীবনের শেষে তিনি কলকাতার হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। এই কলেজে অধ্যয়নকালে ইংরেজী সাহিত্যের প্রতি তাঁর তীব্র অনুরাগ জন্মে। ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হন। তখন তাঁর নামের প্রথমে যোগ হয় ‘মাইকেল’। পাশ্চাত্য জীবনযাপনের প্রতি প্রবল আগ্রহ এবং ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি তীব্র আবেগ তাঁকে ইংরেজী ভাষায় সাহিত্য রচনায় উদ্বুদ্ধ করে। পরবর্তীকালে জীবনের বিচিত্র কষ্টকর অভিজ্ঞতায় তাঁর এই ভুল ভেঙেছিলো। 
বাংলা ভাষায় কাব্য রচনার মধ্য দিয়ে তাঁর কবিপ্রতিভার যথার্থ স্ফূর্তি ঘটে। তাঁর অমর কীর্তি ‘মেঘনাদ-বদ কাব্য’। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ: তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, চতর্দশদী কবিতাবলি। তাঁর নাটক: কৃষ্ণকুমারী, শর্মিষ্ঠা, পদ্মবতী, এবং প্রহসন: একেই কি বলে সভ্যতা ও বুড় সালিকের ঘাড়ে বোঁ। বাংলা কাব্য অমিত্রাক্ষর ছন্দ এবং সনেট প্রবর্তন করে তিনি যোগ করেছেন নতুন মাত্রা। ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে জুন কবি পরলোকগমন করেন তার মানে মৃত্যেুবরণ করেন।

কপোতাক্ষ নদ কবিতা

সতত, হে নদ, তুমি পড় মোর মনে!

সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে!

সতত (যেমতি লোক নিশার স্বপনে

শোনে মায়া-মন্ত্রধ্বনি) তবে কলকলে

জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে!

বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে,

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?

দুগ্ধ-স্রোতারূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে

আর কি হে হবে দেখা?- যত দিন যাবে

প্রজারূপে রাজরূপ সাগরের দিতে

বারি-রূপ কর তুমি; এ মিনতি, গাবে

বঙ্গজ জনের কানে, সখে, সখা-রীতে

নাম তার, এ প্রবাসে মজি প্রেম-ভাবে

লইছে যে তব নাম বঙ্গের সংগীতে।

কপোতাক্ষ নদ কবিতার শব্দার্থ ও টীকা

সতত - অর্থ - সর্বদা।

বিরলে - অর্থ - একান্ত নিরিবিলিতে।

নিশা - অর্থ - রাত্রি।

বারি রূপকর - অর্থ - প্রজা যেমন রাজাকে কর বা রাজস্ব দেয়, তেমনি কপোতাক্ষ নদও সাগরকে জলরূপ কর বা রাজস্ব দিচ্ছে।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে কপোতাক্ষ নদ কবিতা এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হতে পেরেছেন। এ রকম আরো তথ্য মূলক পোস্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা সবসময় পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী পোস্ট দিয়ে থাকি। প্রিয় পাঠক, এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url