দশের লাঠি একের বোঝা ভাবসম্প্রসারণ বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে দশের লাঠি একের বোঝা ভাব সম্প্রসারণটি বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আপনি যদি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে দশের লাঠি একের বোঝা ভাব সম্প্রসারণটি বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
দশের লাঠি একের বোঝা ভাবসম্প্রসারণ বিস্তারিত জেনে নিন

দশের লাঠি একের বোঝা ভাব সম্প্রসারণ

মূলভাবঃ একতাই শক্তি, একতাই বল।

সম্প্রসারিত ভাবঃ কোন কাজ একার পক্ষে জটিল এবং সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। কখনও তার কাছে সে কাজটি পর্বত প্রমাণ বোঝা হয়ে হাজির হয়। কোন ক্রমেই সে কাজটি তার দ্বারা করা আর সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু সেই কাজটি যদি সকলে মিলে করে তবে আর তেমন কঠিন মনে হয় না। অতি সহজে এবং সহজলভ্য পদ্ধতিতে সে কাজটি সুসম্পন্ন হয়ে যায়। এই একতাবদ্ধতার মাঝে মানব সমাজ অগ্রগতির দিকে নিজেদেরকে অগ্রসর করে নিয়ে যেতে পারে। এ কারনেই গুহাবাসী মানুষেরা একতাবদ্ধভাবে কিংবা যুক্তবদ্ধভাবে জীবনযাপন করে এসেছে এবং জন্ম দিয়েছে নব নব সভ্যতা। 
একতাবদ্ধতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সমবায় সমিতি। এই সমবায় সমিতির মাধ্যমে যে কাজ একার পক্ষে সম্ভব নয় সে কাজ সহজেই সবাই মিলে সম্পন্ন করতে পারে। যদি কোন জাতি কিংবা দেশ সকল ব্যাপারে এক থাকে, একজোটে দেশের উন্নতি এবং অগ্রগতির জন্য কাজ করে, তবে তাদের সার্থকতা অনিবার্য। আর তা না করে সবাই যদি বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে, তবে তাদের অগ্রগতি তো হবেই না, বরং সব ব্যাপারই বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। আসলে একতাই সকল উন্নতির সোপান।

মন্তব্যঃ যে কোন কঠিন কাজ সম্মিলিতভাবে করলে সহজেই সম্পাদন করা যায়। সুতরাং একতাই হচ্ছে উন্নতির চাবিকাঠি।

যে সহে সে রহে ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাবঃ ধৈর্য স্থায়িত্বের পূর্বশর্ত।

সম্প্রসারিত ভাবঃ ধৈর্য ও সহনশীলতা মানুষের এক পরম গুণ। অসহিষ্ণু মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। অসহিষ্ণু মানুষ কোন কাজে স্থির থাকতে পারে না। তার পক্ষে কোন কাজই শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করাও সম্ভব হয় না। ধৈর্যের সাথে কেউ কোন কাজে লেগে থাকতে পারলে তার জীবনে অবশ্যসম্ভাবী। প্রাণিজগতে তার অনেক উদাহারণ রয়েছে। ধৈর্যশীল পিপীলিকা অবিরাম পরিশ্রম করে যে খাদ্য সঞ্চয় করে তা পুরো শীতকালে বসে বসে খেতে পারে। ধৈর্যশীল মানুষ জীবনে উন্নতি করতে পারে। ধৈর্য ছাড়া কেউ উন্নতি করতে পারে না। মহামানবদের জীবনেতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তাদের জীবন ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার গুণে পরিপূর্ণ। 

আমাদের মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ) ধৈর্যধারণ শক্তিসম্পন্ন ছিলেন। মক্কার কাফেরদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, এমনকি দৈহিক নির্যাতনও তিনি সহ্য করেছেন। ধৈর্যশীল ছিলেন বলেই রাসূল (সাঃ) ইসলাম প্রচারে পূর্ণ সফলতা অর্জন করেছিলেন। ধৈর্যশীল মানুষেরা জ্ঞানার্জনের কঠিন সংগ্রামে স্থির থাকতে পারেন বলে তাদের পক্ষে জীবন উন্নতি করা সম্ভব হয়। যারা বিপদে ধৈর্যহারা না হয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে পারেন তারাই বিপদকে জয় করতে পারেন। তাদের যতো সহ্য গুণ তাদের ততো উন্নয়ন, ততোই তাদের উন্নতিরও স্থায়িত্ব।

মন্তব্যঃ জগতে সহনশীলরাই টিকে থাকে। সহিঞ্চুতাই মানুষের সাফল্যের স্বর্ণচুড়ায় পৌঁছে দিতে পারে।

জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো

মূলভাবঃ আভিজাত্য বা বংশ পরিচয় নয় বরং কর্মগুণই মানুষের প্রকৃত পরিচয়।

সম্প্রসারিত ভাবঃ বংশ-পরিচয় বা আভিজাত্যের পরিচয় এক হাস্যকর ব্যাপার। সত্যিকারের পরিচয় ব্যক্তির নিজ কর্মগুণ। পিতার গুণ তো শুধু পিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং পুত্রের গুণও পুত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সেক্ষেত্রে পিতৃ-পরিচয়ে পুত্রের পরিচয় প্রদানও অযৌক্তিক। বংশ পরিচয়ে পরিচিত হওয়ার প্রবণতা মানুষের অযোগ্যতার এক লজ্জাকর ব্যাপার। মানুষতো পরিচিত হবে নিজ যোগ্যতা, দক্ষতা ও কর্মগুণে। অন্যের অর্জিত খ্যাতি নিজে আত্তীকরণের মধ্যে কোন গৌরব নেই। গৌরব নেই পিতৃ-পরিচয়ে কিংবা বংশ পরিচয়ে বেঁচে থাকার মধ্যে। বংশ-পরিচয়ে কারো কর্ম জুটে না তথাকথিত ছোট বংশ জন্মগ্রহণ করেও নিজ যোগ্যতা বলে দেশ ও দশের অনেক বড় দায়িত্ব পালন করছেন এমন লোকের সংখ্যা কম নয়।

মন্তব্যঃ বংশ নয়, কর্মের জন্যই মানুষ প্রকৃত মর্যাদার অধিকারী হয়।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে দশের লাঠি একের বোঝা ভাবসম্প্রসারণ সহ আরো দুইটি ভাবসম্প্রসারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং উপকৃত হতে পেরেছেন। প্রিয় পাঠক, এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url