কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে প্রার্থক্য

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে প্রার্থক্য

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক উভয়ই ব্যাংক ব্যবসায়ে নিয়োজিত থাকে। কিন্তু তা সত্বেও উদ্দেশ্য, গঠন, প্রকৃতি এবং কার্যাবলির দিক হতে বিবেচনা করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে প্রার্থক্য
১। কেন্দ্রীয় ব্যাংক হল প্রত্যেক দেশের ব্যাংক ব্যবস্থার কেন্দ্রস্থল। প্রত্যেক দেশে একটি মাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংক থাকে। পক্ষান্তরে, প্রত্যেক দেশেই একাধিক বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে। যেমন; বাংলাদেশের একমাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংক হল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা হল একাধিক। বাংলাদেশে সোনালী ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক লিঃ, রূপালী ব্যাংক প্রভৃতি বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে।

২। গঠন প্রকৃতির দিক হতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের মালিকানাধীনে থাকে অথবা সরকার পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহ বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত হয়ে থাকে।

৩। উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের দিক হতে বিবেচনা করলেও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়। বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহ প্রধানত মুনাফার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এটা শেয়ারহোল্ডারদের দ্বারা গঠিত একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সর্বাধিক মুনাফা অর্জন করাই বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুনাফার ভিত্তিতে পরিচালিত হয় না। একটি সুষ্ঠু অর্থ ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য।

৪। বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ প্রধানত জনসাধারণের নিকট হতে আমানত গ্রহণ করে এবং ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদিগকে ঋণ প্রদান করে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধানত সরকার ও অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করে। বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ সাধারণত জনসাধারণের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করে। পক্ষান্তরে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করে। এছাড়া, অন্যান্য ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্বও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর ন্যস্ত থাকে।

৫। পরিশেষে, নোট প্রচলন এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রকার বিহিত মুদ্রা প্রচলনের অধিকার একমাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ন্যস্ত থাকে। কোন বাণিজ্যিক ব্যাংক নোট প্রচলন বা অন্য কোন প্রকার বিহিত মুদ্রা চালু করতে পারে না। এ সব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলির মধ্যে বিশেষ পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

সুতরাং উদ্দেশ্য, গঠন-প্রকৃতি ও কার্যাবলি প্রভৃতি বিভিন্ন দিক হতে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের মধ্যে কতগুলো মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url