ডিজিটাল কম্পিউটার কি? বিস্তারিত জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি? আমরা সবাই হয়তো জানিনা। কাজের ধরন ও প্রকৃতির ভিত্তিতে কম্পিউটারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন অ্যানালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার, হাইব্রিড কম্পিউটার। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে আমাদের নিত্যদিনের কাজের সঙ্গী কম্পিউটার। কম্পিউটার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। বলা যায় কম্পিউটার ছাড়া সারা বিশ্ব এখন অচল।কম্পিউটার ছাড়া আমরা কোনো কাজ সঠিক ভাবে করতে পারবো না। কম্পিউটার ব্যবহারের সামাজিক প্রতিক্রিয়া প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করছে মানব সভ্যতাকে। সারা বিশ্বে শুরু হয়েছে কম্পিউটার বিল্পব। আর এই আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া বাংলাদেশে লেগেছে ১৯৬৪ সনের ঢাকার পরমাণু শক্তি কমিশন কেন্দ্রে। যে কম্পিউটার দিয়ে বাংলাদেশে প্রথম যাত্রা শুরু হয় তার নাম হচ্ছে আইবিএম ১৬২০।
বাংলাদেশ সমস্ত এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম কম্পিউটার ব্যবহার শুরু করে। আশির দশকের গোড়ার দিকে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাগার ও প্রশাসনিক দপ্তরে মেইনফ্রেম কম্পিউটার স্থাপন করা হয়। বর্তমানে দেশের প্রায় প্রতিটি স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিভাগ নামে আলাদা বিভাগ চালু হয়েছে।
কম্পিউটার কি?
কম্পিউটার হলো একগুচ্ছ বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সমাহার, যা বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে যৈাক্তিক কার্যাবলি সম্পন্ন করে। কম্পিউটার শব্দটি compute শব্দ থেকে এসেছে। কম্পিউটার শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। কম্পিউটার এমন একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র যে যন্ত্রের সাহায্যে যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ এবং জটিল জ্যামিতিক সমাধান করা যায়।
কম্পিউটারের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন- সঠিক ফলাফল, দ্রুত গতি সম্পন্ন, ধারণ ক্ষমতা বা মেমোরি, দ্রুত গতি সম্পন্ন, সহনশীলতা, বহুমুখিতা, যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত, স্বয়ংক্রিয়তা সিদ্ধান্ত, ভুল শনাক্তকরণ সংশোধন, অনভূতিহীন ও নির্বোধ, তথ্য অনুযায়ী কাজ, উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ যোগ্যতা ইত্যাদি।
কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?
- কাজের ধরন ও প্রকৃতির ভিত্তিতে কম্পিউটারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
- অ্যানালগ কম্পিউটার
- ডিজিটাল কম্পিউটার
- হাইব্রিড কম্পিউটার
অ্যানালগ কম্পিউটার কি?
এনালগ কম্পিউটার হল এক ধরনের কম্পিউটার যা সমাধানকৃতব্য সমস্যা আদর্শায়নকল্পে ভৌত ঘটনাবলির অবিচ্ছিন্নভাবে পরিবর্তনশীল পরিপ্রেক্ষিত যেমন বৈদ্যুতিক,যান্ত্রিক অথবা জলবাহি রাশি ব্যবহার করে। অ্যানালগ কথার অর্থ হলো সাদৃশ্য।
আরও পড়ুন: ইমেইল কি? ইমেইলের সুবিধা অসুবিধা
চাপ, তাপ, তরল প্রবাহ ইত্যাদি পরিবর্তনশীল ডাটার জন্য সৃষ্ট বৈদ্যুতিক তরঙ্গ পরিমাপ করে অ্যানালগ কম্পিউটারের কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং সম্পাদিত ফলাফল মিটার বা কাটার সাহায্যে প্রকাশ পায়।
পেট্রোল পাম্পের জ্বালানি সরবরাহ ও মূল্য নির্ণয়ের কাজে গাড়ি, উড়োজাহাজ, মহাকাশযান ইত্যাদির গতিবেগ পরিমাপের জন্য অ্যানালগ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
এনালগ কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
- এটি একের বেশি চিপ দিয়ে তৈরি
- এরা কম ফ্লেক্সিবেল ও ধীর গতির হয়ে থাকে
- ভৌত পরিমাণে ডেটা সঞ্চয় করে
- পরিমাপের সাহায্যে গণনার কাজ সম্পাদন করে
- ভৌত পরিমাণ, বৈদ্যুতিক তারের ভোল্টেজের উঠানামা, পাইপের ভেতরে গ্যাসীয়
- বা তরল পদার্থের চাপের তারতম্য ইত্যাদি পরিমাপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
ডিজিটাল কম্পিউটার কি?
প্রচলিত অর্থে কম্পিউটার বলতে ডিজিটাল কম্পিউটারকেই বুঝানো হয়ে থাকে। ডিজিট শব্দ থেকে ডিজিটাল শব্দের উৎপত্তি। ডিজিটাল কম্পিউটারে বর্ণ, সংখ্যা, সংকেত, প্রতীক ইত্যাদি ইনপুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ডিজিটাল কম্পিউটার শূন্য এবং এক এই দুটি বাইনারি ডিজিট দিয়ে সব ধরনের কাজের প্রত্রিুয়াকরণ সম্পাদন করে। ডিজিটাল কম্পিউটার খুবই সূক্ষ্ণ ও নির্ভুল ফলাফল প্রদান করতে পারে।
সংখ্যা প্রক্রিয়াকরণের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটার কাজ করে। এ কম্পিউটারে প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল সরাসরি লিখিতভাবে পাওয়া যায়।
ডিজিটাল কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
- ডিজিটাল কম্পিউটারে ফলাফল সরাসরি মনিটরে প্রদর্শিত হয় বা অন্য কোন আউটপুট ডিভাইসে প্রকাশিত হয়।
- বাইনারি পদ্ধতিতে ০ ও ১ নিয়ে কাজ সম্পন্ন করে, এটি সব ধরনের ডাটা বাইনারি ০ ও ১ এর মাধ্যমে ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে।
- সংখ্যা প্রক্রিয়াকরণের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটার কাজ করে। ইনপুট, প্রসেসিং এবং আউটপুট প্রদান করে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায়।
- একটি কম্পিউটার বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যবহার করা হয়। কাজের সুক্ষ্ণতা অত্যন্ত বেশি।
- সাধারণত আমরা যে সকল কম্পিউটার ব্যবহার করি সেগুলোর বেশিরভাগই ডিজিটাল কম্পিউটার।
হাইব্রিড কম্পিউটার কি?
অ্যানালগ ও ডিজিটাল এই দুই শ্রেণির কম্পিউটারের প্রযুক্তির সমন্বয়ে মিশ্র প্রযুক্তিতে তৈরি কম্পিউটারকে হাইব্রিড কম্পিউটার বলে। হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ারে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
এ ক্ষেত্রে অ্যানালগ অংশ রোগীর রক্তচাপ, হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া, শরীরের তাপমাত্রা ইত্যাদি উপাত্ত গ্রহণ করে এবং ডিজিটাল অংশে ব্যবহার করার জন্য যোগাযোগ সংখ্যা সংকেতে রুপান্তর করে তা ডিজিটাল অংশে প্রেরণ করে। ডিজিটাল অংশে প্রাপ্ত তথ্যর ভিত্তি করে রোগীর অবস্থা প্রকাশ করে।
আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে?
আধুনিক কম্পিউটারের জনক হলেন চার্লস ব্যাবেজ। কেন চার্লজ ব্যাবেজকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়? তার কারণ হচ্ছে ১৮৩৭ সালে চার্লস ব্যাবেজ নামক ব্রিটিশ গণিতবিদ (Analytical Engine) নামে এক নতুন যন্ত্রের পরিকল্পনা করেন। তার পরিকল্পিত যন্ত্রের চারটি বৈশিষ্ট্য ছিল তার মধ্যে এক নম্বর হলো মেমোরি
এর ব্যবস্থা, লুপ প্রোগ্রামের ব্যবস্থা, তথ্য ইনপুট করার জন্য পানর্স কার্ড এর ব্যবস্থা এবং তথ্য গণনা শেষে প্রিন্ট আকারে বের করার ব্যবস্থা। যদিও চার্লস ব্যাবেজ ঐ সময়ের বিভিন্ন প্রতিকূর পরিবেশের জন্য এই যন্ত্রের বাস্তব কাঠামো তৈরি করতে পারেননি কিন্তু পরবর্তীতে
কম্পিউটার গবেষকগণ চার্লস ব্যাবেজ প্রদত্ত তথ্যর উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার তৈরি করতে সক্ষম হন। তাই চার্লস ব্যাবেজকে তার যুগান্তকারী চিন্তাভাবনা ও গবেষণার জন্য আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়।
কম্পিউটার কত সালে কে আবিষ্কার করেন?
খ্রিষ্টপূর্ব তিন হাজার সালে যন্ত্রের সাহায্যে গণনার যাত্রা শুরু হলেও কম্পিউটার তৈরির প্রথম ধারণা দেন বিজ্ঞানী চার্লস ব্যাবেজ। ১৮৮২ সালে তিনিই প্রথম মেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরি করেছিলেন। তার তৈরি নকশার ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে আধুনিক কম্পিউটার তৈরি করা হয়।
তাই চার্লস ব্যাবেজকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়। ১৯১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হার্ভাড আইকন আইবিএম কোম্পানির সহযোগিতায় বিশ্বের সর্বপ্রথম কম্পিউটার (মার্ক1) তৈরি করেন। তাঁর কম্পিউটারের দৈর্ঘ্য ছিল
৫১ ফুট, উচ্চতা ছিল ৮ফিট,ওজন ৫ টন এবং যন্ত্রাংশ ছিল সাড়ে সাত লক্ষ। এই যন্ত্রের সাহায্যে যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ এবং জটিল কাজ করা হয়েছিলো। এছাড়াও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কামানোর গোলা, ক্ষেপণাস্ত্র ইত্যাদির গতিপথ অঙ্কের মাধ্যমে বের করার জন্য এই কম্পিউটারের সাহায্য নেওয়া হয়েছিলো।
- আকার ও ক্ষমতার ভিত্তিতে কম্পিউটারকে আবার চারটি ভাগে ভাগ করা যায়
- সুপার কম্পিউটার
- মেইনফ্রেম কম্পিউটার
- মিনিফ্রেম কম্পিউটার
- মাইক্রোকম্পিউটার
সুপার কম্পিউটার কি?
সুপার কম্পিউটার সবচেয়ে শক্তিশালী, দ্রুত গতিসম্পন্ন এবং ব্যয়বহুল। আকৃতির দিক হতে সর্ববৃহৎ এ শ্রেণির কম্পিউটারগুলোর তথ্য সংরক্ষণ ক্ষমতা, কার্যসম্পাদনের বা তথ্য প্রক্রিয়াকরণের গতি অবিশ্বাস্য রকমের।
বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বিপুল পরিমাণ তথ্যবিশ্লেষন, নভোযান, জঙ্গি বিমান এবং ক্ষেপনাস্ত নিয়ন্ত্রণ, মহাকাশ গবেষণা, পরমাণু চুল্লি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
সুপার কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
- বিপুল পরিমাণ গণনা পরিচালনা করতে পারে
- দ্রুত তথ্য প্রসেসিং করতে সক্ষম হয়
- ৬৪ বিট বা তার থেকে বেশি মাইক্রোপ্রসেসর চিপ ব্যবহার করা হয়
- বিশাল সংখ্যার প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট রয়েছে
- অল্প সময়ে প্রচুর পরিমাণ গণনা করতে পারে, কারণ এদের ডাটা স্টোরেজ সব থেকে বেশি
মেইনফ্রেম কম্পিউটার কি?
মেইনফ্রেম কম্পিউটার হলো একটি বড় কম্পিউটার, যার সাথে অনেকগুলো ছোট কম্পিউটার যুক্ত করে এক সাথে শতাধিক লোক কাজ করতে পারেন। এ ধরনের কম্পিউটারে একাধিক প্রক্রিয়াকরণ অংশ থাকে। বড় বড় প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে।
ব্যাংক বীমা, অর্থলগ্লীকারী প্রতিষ্ঠান এবং বৈজ্ঞানিক কর্মতৎপরতা পরিচালনা নিয়ন্ত্রণ, বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়নের জন্য মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
মেইনফ্রেম কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
- দ্রুত কাজ করতে সক্ষম
- দ্রুত কাজ করার জন্য হাই এন্ড প্রসেসর ও সফটওয়্যার থাকে
- একসাথে অনেকগুলো নেটওয়ার্ক সংযোগ, মেমোরির সাপোর্ট ও ডিস্ক স্টোরেজ থাকে
- এতে ব্যবহার করা ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেড হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কোনো ব্যর্থতা ছাড়াই ২০ বছর ধরে চলতে পারে
- সিকিউরিটি ফিচার রয়েছে যা, একটি ব্যাংকের সিকিউরিটি ফিচারের সাথে ম্যাচ করে
- যে কোনো বড় প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রে বড় বড় ব্যবসায়ী লেনদেনের কাজে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
মিনি কম্পিউটার কি?
মাইক্রো কম্পিউটারের চেয়ে বড়ো এবংমেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে ছোট গুলোকে মিনি কম্পিউটার বলা হয়। মাঝারি আকারের মাল্টিপ্রসেসিং কম্পিউটারগুলো দুটি বা ততোধিক প্রসেসর নিয়ে গঠিত যা একইসাথে প্রায় ২০০ জন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারে।
বিলিং, অ্যাকাউন্টিং এবং ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টের মতো কাজের জন্য এই ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট এ কম্পিউটার টার্মিনালের একসাথে অনেক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত শিল্প, গবেষেণা, ব্যাংকিং কার্যক্রমে এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
মিনি কম্পিউটারে বৈশিষ্ট্য
- আকারে ছোট এবং কাজের ক্ষমতাও বেশি
- কিছু সংখ্যক ডাম্ব টার্মিনাল যুক্ত থাকে
- এতে একাধিক মানুষ একসাথে কাজ করতে পারে
- ব্যাংক, শিল্প প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বড় গার্মেন্টস কারখানা এবং বহুজাতিক কোম্পানিতে মিনি কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
মাইক্রোকম্পিউটার কি?
মাইক্রোকম্পিউটার হচ্ছে মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে তৈরি সর্বাপেক্ষা ব্যবহৃত কম্পিউটার। সাধারণত একজন লোক একটি মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহার করতে পারেন বলে একে পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি বলা হয়।
এ ধরনের কম্পিউটার তুলনামূলকভাবে দামে কম, সহজে বহনযোগ্য এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হওয়ার ফলে ব্যবহারকারীদের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, দাপ্তরিক, সরকারি, বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
মাইক্রোকম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
- ক্ষুদ্রাকৃতির মাইক্রো প্রসেসর চিপ দিয়ে তৈরি মাইক্রোকম্পিউটার
- একটি প্রধান মাইক্রো প্রসেসর, প্রধান মেমোরি, সহায়ক মেমোরি, ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস নিয়ে গঠিত হয়
- এতে একজন মানুষই একই সময়ে কাজ করতে পারে।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ব্যক্তিগত ব্যবহার, খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের কাজে মাইক্রো কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার করা হয়?
আমরা কম্পিউটার সাধারণত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকি। যেমন-প্রকাশনা শিল্পে,অফিস ব্যবস্থাপনায়,ব্যাংকিং কাজে,চিকিৎসা কাজে,শিক্ষা ক্ষেত্রে,আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার কাজে,সংস্কৃতি ও বিনোদন কাজে,মহাকাশ গবেষণার কাজে,পরিসংখ্যান কাজে, কৃষি গবেষণায়,শিল্প ক্ষেত্রে, যোগাযোগ ব্যবস্থায়,
সামরিক ক্ষেত্রে,ডিজাইনের কাজে,তথ্য ব্যবস্থাপনায় আদালতে ইত্যাদি।আমরা প্রায় সকল কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন ব্যবস্তাপনায় প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের কম্পিউটার ব্যবহার করতে হয়। আগামীতে কম্পিউটার এর ব্যবহার দিন দিন বাড়বে কোনোদিন কমবে না। তাই আমাদের সকলকে কম্পিউটার বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। পোস্ট সূচিপত্র
কম্পিউটারের প্রোগ্রামার কে?
কম্পিউটারের প্রোগ্রামার হলেন লর্ড বাইরনের কন্যা আদা অগাস্টা। লর্ড বাইরনের কন্যা আদা অগাস্টা চার্লস ব্যাবেজ এর পরিকল্পিত নকশার উপর ভিত্তি করে একটি প্রোগ্রাম তৈরি করেন। এই প্রোগ্রামটি
গণনার কাজে,যোগ,বিয়োগ,গুন,ভাগ,বা যা প্রয়োজন তা পূর্ব থেকে নির্দেশ দিতে হবে এবং যন্ত্র যাতে এ নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে পারে তারও ব্যবস্থা থাকবে। এই প্রোগ্রাম তৈরি করার জন্য ইংরেজ কবি লর্ড বাইরেনের কন্যাক আদা অগাস্টাকে বিশ্বের সর্বপ্রথম কম্পিউটারের প্রোগ্রামার বলা হয়।
চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার
১৯৭১ সাল থেকে চতুর্থ প্রজন্ম শুরু হয়েছে বলে ধরা হয়। আরেরিকার জন ব্ল্যাংকন বেকার ১৯৭১ সালে কেনব্যাক নামক প্রথম মাইক্রোকম্পিউটার তৈরি করেন। পরে ১৯৭৭ সালে মাইক্রোকম্পিউটারটি পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি করা হয়। ১৯৮১ সালে আইবিএম কোম্পানি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য প্রথম মাইক্রোকম্পিউটার তৈরি করেন।
মাইক্রোপ্রসেসর নিয়ে গঠিত ছোট কম্পিউটারকে মাইক্রোকম্পিউটার বলে। চতুর্থ প্রজন্ম থেকে মাইক্রো কম্পিউটার চালু হয়। ফলে কম্পিউটারের আকার ছোট হয়। তবে কম্পিউটারের আকার ছোট হলেও কম্পিউটারের গতি অধিক বেড়ে যায়। এ প্রজন্মে কম্পিউটারের স্মৃতি উদ্ভাবিত হতে থাকে। যেমন রম, রেম,ডস ইত্যাদি।
চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার
বহু মাইক্রোপ্রসেসর এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ বিশিষ্ট একীভূত বর্তনীয় ব্যবহার
ট্রানজিস্টরগুলোতে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার
উন্নত মেমোরি তথা ম্যাগনেটিক বা বল মেমরির ব্যবহার
ডাটা ধারণ ক্ষমতার ব্যাপক উন্নতি
অত্যন্ত শক্তিশালী ও উচ্চগতি সম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসরের ব্যবহার
সুপার কম্পিউটারের উন্নয়ন
পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার
এ প্রজন্মের কম্পিউটার চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার হতে অধিক শক্তিশালী। চিপ অপটিক্যাল ফাইবারের সমন্বয়ে এ প্রজন্মের কম্পিউটার তৈরি। এ ধরনের কম্পিউটারের অত্যন্ত শক্তিশালী মাইক্রোপ্রসেসর ও প্রচুর রমাণ ডাটা ধারণ ক্ষমতা সম্পূর্ণ করার গবেষণা চলছে।
বর্তমানে চতুর্থ প্রজেন্মের কম্পিউটার ছাড়াও পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারে মানুষের কণ্ঠস্বর শনাক্ত করার ক্ষমতা ও কণ্ঠে দেয়া নির্দেশ বুঝতে পেরে করার ক্ষমতা রয়েছে। পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারে নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থার উন্নতি সাধিত হয়েছে।
পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
- কৃত্রিম বুদ্ধিসম্পন্ন কম্পিউটার
- তথ্য ধারণ ক্ষমতার ব্যাপক উন্নতি
- স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ, গ্রহণযোগ্য শব্দ দিয়ে কম্পিউটারের সাথে সংযোগ
- বিপুল শক্তিসম্পন্ন সুপার কম্পিউটার উন্নয়ন
- চুম্বক কোর স্মৃতির ব্যবহার
- প্রোগ্রাম সামগ্রীর উন্নতি ইত্যাদি
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে কম্পিউটার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন। এই রকম আরো টেকনোলোজি সম্পর্কিত তথ্য মূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়বেসাইটের সাথেই থাকুন। আমরা সবসময় পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী আর্টিকেল লিখে থাকি। এই আর্টিকেলটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url