আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে কি বুঝায়? বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে কি বুঝায় এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আপনি যদি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে কি বুঝায় তা বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে কি বুঝায়? বিস্তারিত জেনে নিন

আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে কি বুঝায়?

আইয়াম শব্দটি আরবি ইয়াত্তম শব্দের বহুবচন। যার অর্থ হলো সময় বা যুগ। জাহেলিয়া শব্দের অর্থ হলো অন্ধকার, তমসা, বর্বরতা, কুসংস্কার ইত্যাদি। দুইটি মিলিয়ে আইয়ামে জাহেলিয়া শব্দের অর্থ হলো বর্বরতার যুগ, অন্ধকার যুগ, তমসার যুগ বা কুসংস্কারের যুগ। জাহেলিয়া বলতে নবী করিম হযরত মুহাম্মদ ( সা.) এর জন্মের ১০০ বছর আগের ইতিহাস বা যুগের সময় কালকে আইয়ামে জাহেলিয়া বলে। ঐতিহাসিক ইবনে খালদুনের মতে, নবীর জন্মের কিছু বছর আগের কালকে আইয়ামে জাহেলিয়া বলে।

জাহেলিয়া যুগের রাজনৈতিক অবস্থা

তৎকালীন সময়েও এক শ্রেনির লোক অর্থাৎ আরবের বিভিন্ন শ্রেনিপেশার মানুষ বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন শ্রেনিপেশায় নিয়োজিত থাকার পরও রাজনৈতিক কাজে নিয়োজিত থাকত। যেমন- সিরিয়া, হেজাজ, মদীনা, মক্কা প্রভৃতি।

জাহেলিয়া যুগের সাংস্কৃতিক অবস্থা

জাহেলিয়া যুগে ওকাজ নামক একটি বাৎসরিক মেলা হতো। তৎকালীন সময়ে সেই মেলাটি ওকাজ নামক স্থানে হওযার কারনে সেই মেলাকে ওকাজ মেলা বলা হতো। ওকাজ মেলায় বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা হতো যেমন- ঘোড়াদৌড়, মূর্তি অঙ্কন, কাব্য প্রতিযোগিতা, গীতি কাব্য, শ্রেষ্ঠ কবি প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। পোস্ট সূচিপত্র

জাহেলিয়া যুগের অর্থনৈতিক অবস্থা

তৎকালীন সময়ে আরববাসীরা বিভিন্ন ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলো। যেমন: সিরিয়া থেকে উট নিয়ে গিয়ে রাজধানী দামেস্কে বিক্রি করতো। সে সময় আরব বাসীর মেজাজ খুব একটা ভালো ছিল না কারন আরব একটি মরুভূমি এলাকা সেখানে কোনো ভালো ফসল জন্মাতো না।

জাহেলিয়া যুগের ধর্মীয় অবস্থা

জাহেলিয়া যুগ বলতে ইসলাম পূর্ব আরবের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থাকে বোঝানো হয়। এ সময় আরবের ধর্মীয় পরিস্থিতি ছিল গভীর অজ্ঞতা, কুসংস্কার এবং বহু দেব-দেবীর পূজার দ্বারা চিহ্নিত। অধিকাংশ আরব বাসিন্দা মূর্তিপূজায় বিশ্বাসী ছিল এবং বিভিন্ন গোত্রের নিজস্ব উপাস্য দেবতা ছিল। মক্কার কাবা ঘরকে তারা ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে মান্য করলেও, সেখানে ৩৬০টিরও বেশি মূর্তি স্থাপন করেছিল, যার মধ্যে লাত, মানাত, উজ্জা ও হুবল ছিল প্রধান।
একেশ্বরবাদীদের সংখ্যা খুব কম ছিল, তবে কিছু লোক ইবরাহিম (আ.)-এর ধর্ম অনুসরণ করত, যাদের ‘হুনাফা’ বলা হতো। ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরাও আরবের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করত, বিশেষ করে ইয়াসরিব (বর্তমান মদিনা) এবং ইয়েমেনে। তবে এসব ধর্মও বিকৃতির শিকার হয়েছিল, ফলে প্রকৃত তাওহিদী বিশ্বাস খুব কমই দেখা যেত।

মূর্তিপূজা ছাড়াও আরবরা বিভিন্ন কুসংস্কারে বিশ্বাস করত। তারা মনে করত, জ্যোতিষশাস্ত্র ও গণকের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য এবং নানা ধরনের তাবিজ-কবচ ব্যবহার করত। পশুবলি, মানববলির মতো বর্বর রীতি প্রচলিত ছিল, যা তাদের ধর্মীয় জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কাবাঘরে হজ পালন করলেও তাতে বহু শিরক ও বিকৃত আচার-অনুষ্ঠান যুক্ত হয়েছিল।

সংক্ষেপে, জাহেলিয়া যুগের ধর্মীয় অবস্থা ছিল গভীর অজ্ঞতা, মূর্তিপূজা ও কুসংস্কারে পূর্ণ। সত্য ধর্মের আলো প্রায় নিভে গিয়েছিল, যা পরবর্তীতে ইসলাম প্রচারের মাধ্যমে মুছে ফেলা হয়।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে কি বুঝায় এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং উপকৃত হতে পেরেছেন। এ রকম আরো তথ্য মূলক পোস্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা সবসময় পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী পোস্ট পাবলিশ করে থাকি। এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url