বাংলাদেশের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে বাংলাদেশের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আপনি যদি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে বাংলাদেশের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। দীর্ঘ ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের অবস্থান সুনিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশে রয়েছে ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূপ্রকৃতি যা বাংলাদেশ নিজস্ব স্বীকার সত্তা দান করেছে। উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে সামান্য পাহাড়ি অঞ্চল এবং উত্তর ও উত্তরপশ্চিমাংশ সীমিত উচ্চভূমি ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশ নদীবিধৌত এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল। পোস্ট সূচিপত্র
বাংলাদেশের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বদ্বীপ। দেশটির অধিকাংশ অঞ্চল নদীবিধৌত পলি দ্বারা গঠিত। তবে দেশটির উত্তর ও উত্তর পূর্ব অঞ্চলে পার্বত্য ভূমি বিদ্যমান। সর্বোপরি বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি খুবই মনোরম ও বৈচিত্র্যময়। নিচে বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনা করা হলো:
টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ: বাংলাদেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের পাহাড়ি অঞ্চল হলো টারশিয়ারি যুগের পাহাড়। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ এলাকাগুলো নিয়ে এ অঞ্চল গঠিত। হিমালয় পর্বত বিস্তৃত ও গঠিত হওয়ার সময় এসব পর্বতের সৃষ্টি হয়। এ পার্বত্য ভূমির বৈশিষ্ট্য হলো বেলে পাথর, স্লেট জাতীয় প্রস্তর এবং কর্দমের সংমিশ্রণ দ্বারা গঠিত।
আরো পড়ুন: বাংলা নামের উৎপত্তি হলো কি ভাবে?
এছাড়া এ অঞ্চলে ছোটো ছোটো ঝোপজঙ্গল ও বৃক্ষরাজি বিদ্যমান। টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত গঠিত হওয়ার সময় এ সকল পাহাড় সৃষ্টি হয় বলে একে টারশিয়ারি পাহাড় বলে। এ অঞ্চেলে প্রচুর পরিমান বাঁশ, বেত জাতীয় উদ্ভিদ জন্মে। এ ছাড়া বাংলাদেশের দীর্ঘতম বৃক্ষ বৈলাম বৃক্ষ বান্দরবানে জন্মে। কর্ণফুলি, সাঙ্গু, মাতামুহুরী প্রভৃতি নদী ও অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করেছে।
প্লাইস্টোসিন কালের সোপান সমূহ: প্রায় ২৫,০০০ বছর পূর্বে প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ গঠিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এ অঞ্চলের মাটির রং লাল ও ধূসর। প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ নিম্নরুপ: ১. বরেন্দ্রভূমি, ২. মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়, ৩. লালমাই পাহাড়। এছাড়া এ অঞ্চলে আনারস, কমলালেবুসহ নানাপ্রকার ফলদ ও কান্ঠল বৃক্ষ প্রচুর পরিমাণে জন্মে। এ অঞ্চল খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। প্রাকৃতিক গ্যাস, চুনাপাথর, কয়লা প্রভৃতি খনিজ বিদ্যমান।
সাম্প্রতিক কালের প্লাবন সমভূমি: টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ এবং প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ বিস্তীর্ণ সমভূমি। প্লাবন সমভূমি বাংলাদেশের উত্তরাংশ থেকে উপকূলের দিকে ক্রম নিম্নভাবে নেমেছে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা আর এদের শাখানদী ও উপনদী বাহিত পলিমাটি দ্বারা এ অঞ্চল গঠিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এদের গড় উচ্চতা ৯ মিটার। সমুদ্র সমতল হতে দিনাজপুরের উচ্চতা ৩৭.৫ মিনার আর যশোরের উচ্চতা ৮ মিটার। এ অঞ্চলের আয়তন ১,২৪,২৬৫ বর্গমিটার। এদের কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।
উপকূলীয় বদ্বীপ অঞ্চল: উপকূলীয় বদ্বীপ অঞ্চলকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে যেমন, মৃতপ্রায় বদ্বীপ। মৃতপ্রায় বদ্বীপ কুষ্টিয়া ও যশোর জেলার গড়াই, মধুমতী, বিধৌত এলাকা খুলনা, ফরিদপুরের কিছু অংশ। সক্রিয় বদ্বীপ: সক্রিয় বদ্বীপ মেঘনা মোহনা ও গড়াই মধুমতী মুখ, পদ্মা ও মেঘনার সম্মিলিত স্রোতধারা দ্বারা গঠিত ভূমিই হলো সক্রিয় বদ্বীপ। বরিশাল, পটুয়াখালি, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর প্রভৃতি এর অন্তর্ভুক্ত।
পরিশেষে বলা যায় যে, ভূ প্রকৃতি ও অবস্থান একটি দেশের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভৃপ্রকৃতি ও অবস্থানের দ্বারা একটি দেশের সমাজ ও জাতি গড়ে ওঠে এবং স্বকীয় সত্তা ও সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। ভূপ্রকৃতি বৈশিষ্ট্য সমাজে বসবাসরত মানুষের উপর প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি বৈশিষ্ট্য বৈচিত্রময় ও নৈসর্গিক। এ দেশের জনগনের জীবন ধারণ ও সামগ্রিক কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রন করে থাকে।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে বাংলাদেশের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং উপকৃত হতে পেরেছেন। এ রকম আরো তথ্য মূলক পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। আমরা সবসময় পাঠকের চাহিদা অনুয়ায়ী পোস্ট পাবলিশ করে থাকি। এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url