সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ বিস্তারিত জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েবেন। আপনি যদি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সূরা মূলক হল পবিত্র কুরআনের ৬৭তম সূরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এটি ৩০ আয়াত বিশিষ্ট একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা মানুষের জীবন ও মৃত্যুর তাৎপর্য, আল্লাহর ক্ষমতা, সৃষ্টির সৌন্দর্য ও পরকালীন জবাবদিহিতার বিষয়ে গভীর বার্তা বহন করে। "মূলক" শব্দের অর্থ "সার্বভৌম ক্ষমতা" বা "রাজত্ব", যা আল্লাহর সর্বশক্তিমান ও সর্বাধিপতি সত্তার প্রতীক।
সূরা মূলকের মূল বক্তব্য
এই সূরায় আল্লাহর অসীম ক্ষমতা, আকাশ ও পৃথিবীর বিস্ময়কর সৃষ্টি, মানবজাতির জন্য উপদেশ এবং আখিরাতের ভয়াবহ শাস্তি ও পুরস্কারের বর্ণনা রয়েছে। সূরার প্রথম আয়াতেই বলা হয়েছে:
تَبَارَكَ ٱلَّذِى بِيَدِهِ ٱلْمُلْكُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
"বরকতময় তিনি, যাঁর হাতে সকল রাজত্ব; এবং তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাশালী।" (সূরা মূলক: ১)
আল্লাহর সৃষ্টি ও তাঁর নিখুঁত পরিকল্পনা
সূরা মূলকে আল্লাহ তাআলা আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র, পাহাড় ও মহাবিশ্বের বিস্ময়কর সৃষ্টির কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, কেউ যদি আকাশের দিকে তাকায়, তবে সে কোনো ত্রুটি খুঁজে পাবে না। এটি আল্লাহর নিখুঁত সৃষ্টিশীলতার প্রমাণ বহন করে।
পরকালের শাস্তি ও পুরস্কার
এই সূরায় জাহান্নামের কঠিন শাস্তির বিবরণ দেওয়া হয়েছে। পাপীদের বলা হবে যে তাদের জন্য দুঃখজনক পরিণতি অপেক্ষা করছে। অন্যদিকে, যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর আদেশ পালন করে, তারা জান্নাতের অনন্ত সুখ লাভ করবে।
সূরা মূলক পড়ার ফজিলত
আরো পড়ুন: সূরা আন-নাস বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতের বেলা সূরা মূলক পাঠ করবে, সে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, যা মুসলিমদের আখিরাতে রক্ষা করার জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
১. تَبَارَكَ ٱلَّذِى بِيَدِهِ ٱلْمُلْكُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ قَدِيرٌ
উচ্চারণ: তাবা-রাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু ওয়া হুওয়া আলা-কুল্লি শাইয়িন কাদীর।
অর্থ: বরকতময় তিনি, যাঁর হাতে সকল রাজত্ব; এবং তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাশালী।
২. ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْمَوْتَ وَٱلْحَيَوٰةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًۭا ۚ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْغَفُورُ
উচ্চারণ: আল্লাযী খালাকাল মাওতা ওয়াল হায়া-তা লিইয়াবলুওয়াকুম আইয়ুকুম আহছানু আমালাওঁ ওয়া হুওয়াল আযীযুল গফূর।
অর্থ: তিনি সেই সত্তা, যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তিনি তোমাদের পরীক্ষা করতে পারেন—কে তোমাদের মধ্যে উত্তম কাজ করে। তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।
৩. ٱلَّذِى خَلَقَ سَبْعَ سَمَـٰوَٰتٍ طِبَاقًۭا ۖ مَّا تَرَىٰ فِى خَلْقِ ٱلرَّحْمَـٰنِ مِن تَفَـٰوُتٍۢ ۖ فَٱرْجِعِ ٱلْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِن فُطُورٍۢ
উচ্চারণ: আল্লাযী খালাকা ছবি আ ছামা-ওয়া তিন তিবা-কান-মা তারা-ফী খালকির রাহমা-নি মিন তাফা-উত ফারজি ইল বাসারা হাল তার-মিন ফুতূর।
অর্থ: তিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সাত আকাশ। তুমি দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো অসামঞ্জস্য দেখবে না। পুনরায় দৃষ্টি ফেরাও—তুমি কি কোনো ত্রুটি দেখতে পাও?
৪. ثُمَّ ٱرْجِعِ ٱلْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنقَلِبْ إِلَيْكَ ٱلْبَصَرُ خَاسِئًۭا وَهُوَ حَسِيرٌۭ
উচ্চারণ: ছু ম্মার জি ইলবাসারা কাররাতইনি ইয়ানকালিব ইলাইকাল বাসারু খা-ছিআঁও ওয়া হুওয়া হাছীর।
অর্থ: এরপর বারবার তোমার দৃষ্টি ফেরাও; তোমার দৃষ্টি তোমার দিকে ক্লান্ত ও অবনত হয়ে ফিরে আসবে।
৫.وَلَقَدْ زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَـٰبِيحَ وَجَعَلْنَـٰهَا رُجُومًۭا لِّلشَّيَـٰطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ ٱلسَّعِيرِ
উচ্চারণ: ওয়া লাকাদ ঝাইয়ান্নাছ ছামাআদ্দুনইয়া-বিমাসা-বীহা ওয়াজা আলনা-হা-রুজূমাল লিশশায়া-তীনী ওয়া তাদনা-লাহুম আযা-বাছছাঈর।
অর্থ: আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপ দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং শয়তানদের জন্য এটিকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছি। আমি তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
৬. وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ ۖ وَبِئْسَ ٱلْمَصِيرُ
উচ্চারণ: ওয়া লিল্লাযীনা কাফারুবিরাব্বিহিম আযা-বুজাহান্নামা ওয়াবিছাল মাসীর।
অর্থ: আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করেছে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। আর তা কত নিকৃষ্ট অবস্থান!
৭. إِذَآ أُلْقُوا۟ فِيهَا سَمِعُوا۟ لَهَا شَهِيقًۭا وَهِىَ تَفُورُ
উচ্চারণ: ইযাউলকূফীহা-ছামিউল লাহা-শাহীকাওঁ ওয়াহিয়া তাফূর।
অর্থ: যখন তাদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা শুনবে তার প্রচণ্ড গর্জন, আর তা উত্তাল হবে।
৮. تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ ٱلْغَيْظِ ۖ كُلَّمَآ أُلْقِىَ فِيهَا فَوْجٌۭ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَآ أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌۭ
উচ্চারণ: তাকা-দুতামাইয়াঝুমিনাল গাইজি কুল্লামাউলকিয়া ফীহা-ফাওজুন ছাআলাহুম খাঝানাতুহাআলাাম নাযীর।
অর্থ: প্রায় তা (জাহান্নাম) ক্রোধে ফেটে যাবে। যখনই সেখানে একটি দল নিক্ষিপ্ত হবে, তখন এর রক্ষীরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের কাছে কি কোনো সতর্ককারী আসেনি?’
৯. قَالُوا۟ بَلَىٰ قَدْ جَآءَنَا نَذِيرٌۭ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ ٱللَّهُ مِن شَىْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِى ضَلَـٰلٍۢ كَبِيرٍۢ
উচ্চারণ: লূবালা-কাদ জাআনা-নাযীরুন ফাকাযযাবনা-ওয়া কুলনা-মানাঝঝালাল্লা-হু মিন শাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা- ফী দালা-লিন কাবীর।
অর্থ: তারা বলবে, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদের কাছে সতর্ককারী এসেছিলেন, কিন্তু আমরা তাকে অস্বীকার করেছিলাম এবং বলেছিলাম—আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা তো শুধু ভয়ংকর বিভ্রান্তিতে রয়েছো।’
১০. وَقَالُوا۟ لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِىٓ أَصْحَـٰبِ ٱلسَّعِيرِ
উচ্চারণ: ওয়া ক্বালু লাও কুন্না নাস্মাউ আও না’কিলু, মা কুন্না ফী আস্হাবিস্ সাঈর।
অর্থ: তারা বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম বা বোধগম্য করতাম, তাহলে দহনকুণ্ডের অধিবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।’
১১. فَٱعْتَرَفُوا۟ بِذَنۢبِهِمْ فَسُحْقًۭا لِّأَصْحَـٰبِ ٱلسَّعِيرِ
উচ্চারণ: ফা’তারাফূ বিঝাম্বিহিম ফাসুহক্বাল লি আস্হাবিস্ সাঈর।
অর্থ: অতঃপর তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব, ধ্বংস হোক দহনকুণ্ডের অধিবাসীদের জন্য!
১২. إِنَّ ٱلَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُم بِٱلْغَيْبِ لَهُم مَّغْفِرَةٌۭ وَأَجْرٌۭ كَبِيرٌ
উচ্চারণ: ইন্নাল্লাযীনা ইয়াখ্শাউনা রাব্বাহুম বিল্ গাইবি লাহুম মাগফিরাতুন ওয়া আজরুন্ কাবীর।
অর্থ: নিশ্চয়ই যারা তাদের রবকে অদৃশ্যভাবে ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং মহাপুরস্কার।
১৩. وَأَسِرُّوا۟ قَوْلَكُمْ أَوِ ٱجْهَرُوا۟ بِهِۦٓ ۖ إِنَّهُۥ عَلِيمٌۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
উচ্চারণ: ওয়া আসির্রূ কওলাকুম আওইজহারু বিহি, ইন্নাহু আলীমুম্ বিদ্জাতিস্ সুদূর।
অর্থ: তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বলো কিংবা প্রকাশ্যে বলো, তিনি তো অন্তরের গোপন বিষয় জানেন।
১৪. أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ ٱللَّطِيفُ ٱلْخَبِيرُ
উচ্চারণ: আলা ইয়াআলামু মান্ খালাক, ওয়া হুয়াল্ লাতীফুল্ খাবীর।
অর্থ: যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি (তোমাদের সম্পর্কে) জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী ও সবকিছু সম্পর্কে অবহিত।
১৫. هُوَ ٱلَّذِى جَعَلَ لَكُمُ ٱلْأَرْضَ ذَلُولًۭا فَٱمْشُوا۟ فِى مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا۟ مِن رِّزْقِهِۦ ۖ وَإِلَيْهِ ٱلنُّشُورُ
উচ্চারণ: হুয়াল্লাযী জা’আলালাকুমুল আরদা যালূলা, ফামশূ ফী মানাকিবিহা, ওয়া কুলূ মিন্ রিযকিহি, ওয়া ইলাইহিন্ নুশূর।
অর্থ: তিনিই সেই সত্তা, যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে অনুগত করেছেন; অতএব তোমরা এর পথ-প্রান্তর ধরে চলাফেরা করো এবং তাঁর দেওয়া রিজিক গ্রহণ করো। আর তাঁর দিকেই হবে পুনরুত্থান।
১৬. أَأَمِنتُم مَّن فِى ٱلسَّمَآءِ أَن يَخْسِفَ بِكُمُ ٱلْأَرْضَ فَإِذَا هِىَ تَمُورُ
উচ্চারণ: আ-আমিনতুম্ মান্ ফিস্ সামা’ ইআই ইয়াখসিফা বিকুমুল্ আরদা ফাইযা হিয়া তামূর।
অর্থ: তোমরা কি নিশ্চিত যারা আসমানে রয়েছে, তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দেবেন না? ফলে তা (পৃথিবী) তীব্রভাবে কাঁপতে থাকবে।
১৭. أَمْ أَمِنتُم مَّن فِى ٱلسَّمَآءِ أَن يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًۭا ۖ فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ
উচ্চারণ: আম্ আমিনতুম্ মান্ ফিস্ সামা’ ইআই ইউরসিলা আলাইকুম হাছিবা, ফাসাতা’লামূনা কাইফা নাযীর।
অর্থ: নাকি তোমরা নিশ্চিত যে, আসমানে যিনি রয়েছেন, তিনি তোমাদের প্রতি পাথরবৃষ্টি প্রেরণ করবেন না? তখন তোমরা জানতে পারবে, আমার সতর্কবাণী কেমন!
১৮. وَلَقَدْ كَذَّبَ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ
উচ্চারণ: ওয়ালাকাদ্ কায্যাবাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিহিম্ ফাকাইফা কানা নাকীর।
অর্থ: তাদের পূর্ববর্তীরাও সত্যকে অস্বীকার করেছিল; অতএব আমার শাস্তি কেমন হয়েছিল দেখো!
১৯. أَوَلَمْ يَرَوْا۟ إِلَى ٱلطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَٰٓفَّٰتٍۢ وَيَقْبِضْنَ ۚ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا ٱلرَّحْمَٰنُ ۚ إِنَّهُۥ بِكُلِّ شَىْءٍۢ بَصِيرٌ
উচ্চারণ: আওয়ালাম্ ইয়ারাউ ইলাত্ তাইরি ফাওক্বাহুম্ সাফফাতিন্ ওয়া ইয়াক্ববিজ্ন, মা ইউমসিকুহুন্না ইল্লার্ রাহমান, ইন্নাহু বিকুল্লি শাই’ইন্ বাছীর।
অর্থ: তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরে পাখিদের দিকে, যারা ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় ও সেগুলো গুটিয়ে নেয়? তাদেরকে আকাশে স্থির রাখেন একমাত্র দয়াময় আল্লাহ। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছু ভালোভাবে দেখেন।
২০. أَمَّنْ هَٰذَا ٱلَّذِى هُوَ جُندٌۭ لَّكُمْ يَنصُرُكُم مِّن دُونِ ٱلرَّحْمَٰنِ ۚ إِنِ ٱلْكَٰفِرُونَ إِلَّا فِى غُرُورٍ
উচ্চারণ: আম্মান্ হাযাল্লাযী হুয়া জুন্দুল্লাকুম্ ইয়ান্সূরুকুম্ মিন্ দুনির্ রাহমান, ইনিল্ কাফিরূনা ইল্লা ফী গুরূর।
অর্থ: কে আছো, যে তোমাদেরকে দয়াময় আল্লাহ ছাড়া রক্ষা করতে পারে? কিন্তু কাফিররা প্রতারণায় ডুবে রয়েছে।
২১.أَمَّنْ هَٰذَا ٱلَّذِى يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُۥ ۚ بَل لَّجُّوا۟ فِى عُتُوٍّۢ وَنُفُورٍ
উচ্চারণ: আম্মান্ হাযাল্লাযী ইয়ার্যুকুকুম্ ইন্ আম্সাকা রিযক্বাহু, বাল্ লাজ্জূ ফী উতুয়্যিউঁ ওয়া নুফূর।
অর্থ: কে আছে যে তোমাদের রিজিক দেবে, যদি তিনি (আল্লাহ) তা বন্ধ করে দেন? বরং তারা (অবিশ্বাসীরা) দম্ভ ও বিদ্রোহে লিপ্ত রয়েছে।
২২. أَفَمَن يَمْشِى مُكِبًّا عَلَىٰ وَجْهِهِۦٓ أَهْدَىٰٓ أَمَّن يَمْشِى سَوِيًّا عَلَىٰ صِرَٰطٍۢ مُّسْتَقِيمٍ
উচ্চারণ: আফা-মান্ ইয়াম্শী মুকিব্বান্ ‘আলা ওয়াজহিহি আহ্দা, আম্মান্ ইয়াম্শী সাওিয়্যাঁ ‘আলা সিরাতিম্ মুস্তাকীম?
অর্থ: সে ব্যক্তি কি অধিক সৎপথে আছে, যে তার মুখ নিচের দিকে করে হাঁটে, না সে ব্যক্তি, যে সোজা পথে চলে?
২৩. قُلْ هُوَ ٱلَّذِىٓ أَنشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ ٱلسَّمْعَ وَٱلْأَبْصَٰرَ وَٱلْأَفْـِٔدَةَ ۚ قَلِيلًۭا مَّا تَشْكُرُونَ
উচ্চারণ: কুল্ হুয়াল্লাযী আন্শাআকুম্ ওয়া জা’আলা লাকুমুস্ সাম’আ ওয়াল্ আবছ্বারা ওয়াল্ আফ্ইদাহ, কলীলাম্মা তাশকুরূন।
অর্থ: বলুন, তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় তৈরি করেছেন; কিন্তু তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।
২৪. قُلْ هُوَ ٱلَّذِى ذَرَأَكُمْ فِى ٱلْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ
উচ্চারণ: কুল হুয়াল্লাযী জারআ’কুম ফিল আরদি ওয়া ইলাইহি তুহশারুন।
অর্থ: বলুন, তিনিই সেই সত্তা, যিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন, এবং তাঁর দিকেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।
২৫. وَيَقُولُونَ مَتَىٰ هَٰذَا ٱلْوَعْدُ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
উচ্চারণ: ওয়াইয়াকুলুনা মাতাহা-যাল ওয়াদু ইন কুন্তুম সাদিকীন।
অর্থ: তারা বলে, ‘‘এই প্রতিশ্রুতি কবে বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’’
২৬. قُلْ إِنَّمَا ٱلْعِلْمُ عِندَ ٱللَّهِ وَإِنَّمَآ أَنَا۠ نَذِيرٌۭ مُّبِينٌۭ
উচ্চারণ: কুল ইন্নামাল ইলমু ইন্দাল্লাহি ওয়া ইন্নামা আনা নাযীরুম মুবীন।
অর্থ: বলুন, ‘‘এ সম্পর্কিত জ্ঞান শুধু আল্লাহর নিকট রয়েছে, আর আমি তো শুধুই একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।’’
২৭. فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةًۭ سِيٓـَٔتْ وُجُوهُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَقِيلَ هَٰذَا ٱلَّذِى كُنتُم بِهِۦ تَدَّعُونَ
উচ্চারণ: ফালাম্মা রাওহু জুলফাতান সিয়াত উজুহুল্লাযিনা কাফারু ওয়া ক্বীলাহা-যাল্লাযি কুন্তুম বিহি তাদ্দাউন।
অর্থ: অতঃপর যখন তারা (শাস্তি) কাছাকাছি দেখবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে, আর বলা হবে, ‘‘এটাই তো তা, যা তোমরা দাবি করতে!’’
২৮. قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِىَ ٱللَّهُ وَمَن مَّعِىَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَن يُجِيرُ ٱلْكَـٰفِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
উচ্চারণ: কুল্ আরা’আইতুম ইন আহলাকানিয়াল্লাহু ওয়া মান মা’ইয়া আও রহিমানা, ফামান্ ইউজীরুল্ কাফিরিনা মিন আযাবিন আলীম।
অর্থ: বলুন, ‘‘তোমরা কী মনে করো, যদি আল্লাহ আমাকে ও আমার সঙ্গে যারা আছে তাদের ধ্বংস করেন বা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে (তাতে কী আসে যায়)? তবে কাফিরদের জন্য কে আছে যে তাদের বেদনাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’’
২৯. قُلْ هُوَ ٱلرَّحْمَٰنُ ءَامَنَّا بِهِۦ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا ۖ فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِى ضَلَـٰلٍۢ مُّبِينٍۢ
উচ্চারণ: কুল হুয়ার রাহমানু আমান্না বিহি ওয়া আলাইহি তাওয়াক্কালনা, ফাসাতা’লামুনা মান হুয়া ফী দোলালিম মুবীন।
অর্থ: বলুন, ‘‘তিনিই দয়াময় আল্লাহ; আমরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর ওপরই ভরসা করেছি। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে কে প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে রয়েছে!’’
৩০.قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَآؤُكُمْ غَوْرًۭا فَمَن يَأْتِيكُم بِمَآءٍۢ مَّعِينٍۭ
উচ্চারণ: কুল্ আরা’আইতুম ইন্ আসবাহা মাউকুম্ গাওরান, ফামান্ ইয়াতীকুম্ বিমা’ইন্ মাঈন?
অর্থ: বলুন, ‘‘তোমরা কী মনে করো, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে বিলীন হয়ে যায়, তাহলে কে তোমাদের জন্য স্বচ্ছ প্রবাহমান পানি আনবে?’
উপসংহার
প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং উপকৃত হতে পেরেছেন। এ রকম আরো তথ্য মূলক পোস্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা সবসময় পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী পোস্ট পাবলিশ করে থাকি। এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহাকরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url