সন্তানের আকিকা দেওয়ার নিয়ম বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে সন্তানের আকিকা দেওয়ার নিয়ম এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেবো। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আপনি যদি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে সন্তানের আকিকা দেওয়ার নিয়ম বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, চলনু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সন্তানের আকিকা দেওয়ার নিয়ম বিস্তারিত জেনে নিন
আকিকা আরবি শব্দ। এর অর্থ ভাঙ্গা, কেটে ফেলা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় সন্তান জন্মের পর সপ্তম দিনে তার কল্যাণ কামনা করে আল্লাহর নামে কোন হালাল গৃহপালিত পশু যবেহ করাকে বলা হয়। আকিকা করা সুন্নত। এর মাধ্যমে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়। সন্তানের বিপদ আপদ দূর হয়। কাজেই প্রত্যেক পিতা-মাতার উচিত সন্তানের নামে যথাসময়ে আকিদা করা। হাদিসে আছে, প্রতিটি নবজাত সন্তান আগেকার সাথে সম্পৃক্ত। 

তার ধর্মের সপ্তম দিনে তার নামে পশুর জবই হোক করতে হবে। তার নাম রাখা হবে, চুল মুগুন করতে হবে। নবী করিম সাঃ এর আগেও আকিকার প্রচলন ছিল। আল্লাহ তায়ালার অনুমতিতে তিনি তা চালু রাখেন। মহানবী সাঃ নিজে করেছেন, অন্যকে এ ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন। পিতা-মাতা আকিকা না করলে নিজের আকিকা নিজেই করা যায়। রাসূলুল্লাহ সাঃ নবী হওয়ার পর নিজের আগেিকা নিজেই করেছিলেন। 
আকিকা সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে করা মুস্তাহাব। সপ্তম দিনে না পারলে ১৪,২১ তারিখে অর্থাৎ প্রতি অতিরিক্ত সপ্তম দিনও করা যায়। মাতা পিতার কাছে সবচেয়ে প্রিয় হল সন্তান। সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে চারটি কাজ করা উত্তম। সন্তানের ইসলামী নাম রাখা, মাথা মুগুন করা, মাথার চুলের ওজন পরিমাণ শোনা বা রুপা বা তার সমতুল্য মূল্য দান করা ও আকিকা করা।

আকিকা দেওয়ার নিয়ম

মুসলমানের প্রত্যেকটি ভালো কাজই ব্যাপক অর্থে ইবাদত। ইবাদত আদেশ সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। আর নিয়মমতো কাজটি সমাধান করলে অবশ্যই আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া যায়। তাই আকিকা করাও একটি ইবাদত এবং তা আদায়ের সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল ও মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল জবাই করাই যথেষ্ট। 

আকিকার জন্য ছেলে হলে দুটি আর মেয়ে হলে একটি ছাগল বা ভেড়া জবাই করতে হয় কিংবা কুরবানী গরুর মধ্যে ছেলের জন্য দুই আর মেয়ের জন্য এক অংশ নেওয়া যায়। যে সকল পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় ওই সকল পশু দ্বারা আকিকাও চলে। আকিকার পশুর বয়স কোরবানির পশুর বয়সের অনুরূপ হতে হবে। 

আকিকার পশুর গোশত কোরবানির পশুর গোশত নাই তিন ভাগ করে একই নিয়মে বন্টন করতে হবে। সন্তানের পিতা-মাতা, ভাই বোন সকলে খেতে পারে। এ গোস্ত রান্না করে আত্মীয়-স্বজন ও গরিব মিসকিনকে খাওয়ানো যায়। চামড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হয়। আকিকার পশু সন্তানের পিতার নিজ হাতে জবাই করা উত্তম। নিজে অপরাগ হলে অন্যের সাহায্য নিয়ে জবেহ করা যায়।

কুরবানির সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম

ইসলামী শরীয়তে কুরবানি এবং আকিকা দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা মুসলমানদের জীবনে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কুরবানি একটি আবশ্যক ইবাদত, যা ঈদুল আজহার সময় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু জবাই করার মাধ্যমে পালন করা হয়। অন্যদিকে, আকিকা একটি সুন্নত ইবাদত, যা সন্তানের জন্ম উপলক্ষে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য সম্পন্ন করা হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠে, কুরবানির পশুর অংশ বা একই পশু দিয়ে আকিকা আদায় করা যাবে কি না।

ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী, কুরবানির পশু এবং আকিকার উদ্দেশ্য কিছুটা আলাদা হলেও কোরবানির পশুর সাথে আকিকা করা যায় কিছু আলেমদের মতে। এক পশুতে দুইটি নিয়ত করা নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও অধিকাংশ ইসলামি পণ্ডিতের মতে, একই পশু দিয়ে কুরবানি ও আকিকা একসাথে করা জায়েজ। তবে এটি নির্ভর করে ব্যক্তির নিয়তের ওপর। হাদিসে পাওয়া যায়, হযরত মুহাম্মদ (সা.) আকিকার জন্য একটি পশু জবাই করার কথা বলেছেন। এটি সুন্নত, কিন্তু আবশ্যক নয়।

যদি কেউ চায়, তবে একটি গরু বা উটের সাত ভাগের এক ভাগ আকিকার জন্য এবং বাকি অংশ কুরবানির জন্য নির্ধারণ করতে পারে। কিন্তু এটি করতে হলে নিয়ত বিশুদ্ধ রাখা অত্যন্ত জরুরি। আলেমদের মতে, আকিকা করার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই এবং মাংস বিতরণ করতে হয়।

সামগ্রিকভাবে, কুরবানি এবং আকিকা উভয়ই আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে করা ইবাদত। তাই এই বিষয়গুলোতে ইসলামের বিধান অনুযায়ী আমল করাই উত্তম। একজন মুসলমানের উচিত বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এই ইবাদতগুলো সম্পন্ন করা।

আকিকার টাকা কে দেয়?

আকিকার খরচ কে বহন করে? নবজাতক শিশুর বাবা সাধারণত এর খরচ বহন করেন । তবে, যদি বাবা সক্ষম না হন, অথবা যদি তিনি অনুমতি দেন, তাহলে অন্য কোন আত্মীয় আকিকার খরচ বহন করতে পারেন। নবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর প্রিয় নাতি ইমাম হাসান ও হুসাইন (আ.)-এর পক্ষ থেকে আকিকা আদায় করেছিলেন।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে সন্তানের আকিকা দেওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং উপকৃত হতে পেরেছেন। এ রকম আরো তথ্য মূলক পোস্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা সবসময় পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী পোস্ট পাবলিশ করে থাকি। এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url