হার্ট-বিট বা পালস গণনার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে পালস গণনার পদ্ধতি এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আপনি যদি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে পালস গণনার সঠিক পদ্ধতি বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
হার্ট-বিট বা পালস গণনার সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন
হার্ট-বিট হলো হৃদযন্ত্রের সংকোচন এবং প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনের একটি প্রক্রিয়া। এটি মানব দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম যা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। প্রতিটি হার্ট-বিটের মাধ্যমে রক্ত সারা শরীরে পুষ্টি এবং অক্সিজেন পৌঁছে দেয়।

হার্ট-বিট সাধারণত মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার হয়ে থাকে, তবে এটি বয়স, শারীরিক অবস্থা, এবং মানসিক অবস্থার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। যখন আমরা শারীরিক পরিশ্রম করি বা কোনো মানসিক চাপের মধ্যে থাকি, তখন হার্ট-বিটের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। আবার বিশ্রামের সময় এটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। পোস্ট সূচিপত্র

হার্ট-বিট বা পালস গণনার সঠিক পদ্ধতি

রোগীর হাতের কবজিতে হাতের তিন আঙ্গুল যেমন: অনামিকা, মধ্যমা ও তর্জনি দিয়ে চাপ দিলে হৃদস্পদন প্রতি মিনিটে কতবার হয় তা অনুভব করা যায়। হাতের তিন আঙ্গুল এমন ভাবে রাখতে হবে যেন তর্জনি থাকে হৃদপিণ্ডের দিকে, মাথা মাঝখানে এবং অনামিকা হাতের আঙ্গুলের দিকে। মধ্যমা আঙ্গুল দিয়ে বোঝা যাবে হাতের রেডিয়াল ধমনি কত বার ধুকধুক করছে। এক মিনিটে কতবার স্পন্দিত হচ্ছে, সেটাই হচ্ছে পালস রেট বা পালসের গতি। পালসকে আমরা সাধারণভাবে নাড়ি বলে থাকি।
কবজিতে পালস পাওয়া না গেলে কণ্ঠনালির পাশে হৃদস্পন্দন দেখা যেতে পারে অথবা সরাসরি বুকে কান পেতও হার্ট শোনার চেষ্টা করা যেতে পারে। যেকোনো সাধারণ মানুষের পালসের গতি প্রতি মিনিটে কতবার হচ্ছে তা দেখা যায় উপরের বর্ণনা অনুসারে ব্যবস্থা নিলে। ঘড়ি ধরে পালসের গতি দেখতে হয়। সাধারণত পালসের গতি দ্রুত হয় পরিশ্রম করলে, ঘাবড়ে গেলে, ভয় পেলে, তীব্র যন্ত্রনা হলে কিংবা জ্বর হলে। 

পালসের স্বাভাবিক গতি হলো প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার। শিশুদের জন্য এটি প্রতি মিনিটে ১০০ থেকে ১৪০ বার। পূর্নবয়স্ক মানুষের পালস রেট প্রতি মিনিটে ১০০ এর অধিক হয় জ্বর বা শক্ অথবা থাইরয়েড গ্রন্থির অতি কার্যকারিতার কারণে। ১ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপ বৃদ্ধির জন্য পালসের গতি প্রতি মিনিটে ১০ বার বাড়ে। পালসের গতি খুব দ্রুত খুব মন্থর বা অনিয়ন্ত্রিত হলে বুঝতে হবে যে হৃদপিণ্ডের সমস্যা আছে। 

প্রতি মিনিটে পালসের গতি ৬০ এর কম হতে পারে হার্ট বা ব্লকের বা জন্ডিসের কারণে। স্বাভাবিক ভাবে মানসিক উত্তেজনা, ব্যায়াম, সন্ধ্যার দিকে পালসের গতি বেড়ে যায়। এ অবস্থায় পালসের গতি অধিক হলেও তা স্বাভাবিক ভাবতে হবে। ঘুমানো অবস্থায় এবং রাতে সুনিদ্রার পর সকালে পালসের গতি ৬০ এর কম হতে পারে এ অবস্থাকেও স্বাভাবিক ধরতে হবে।

রক্তচাপ কাকে বলে

হৃদপিণ্ডের সংকোচন এবং প্রসারণের ফলে হৃদপিণ্ড থেকে রক্ত ধমনির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় ধমনিপ্রাচীরে যে পার্শ্বচাপ সৃষ্টি হয়, সেটাকে রক্তচাপ বলে। তাই রক্তচাপ বলততে সাধারণভাবে ধমনির রক্তচাপকেই বুঝায়। রক্তচাপ হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা, ধমনির প্রাচীরের স্থিতিস্থাপকতা এবং রক্তের ঘনত্ব এবং পরিমাপের উপর নির্ভর করে। 

নিলয়ের সিস্টোল অবস্থায় ধমনিতে যে চাপ থাকে তাকে সিস্টোলিক রক্তচাপ এবং ডায়াস্টোল অবস্থায় যে চাপ থাকে তাকে ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ বলে। স্বাভাবিক এবং সুস্থ একজন পাপ্তবয়স্ক মানুষের সিস্টোলিক রক্তচাপ পারদ স্তম্ভের ১১০-১৪০ মিলিমিটার এবং ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ পারদ স্তরের ৬০-৯০ মিলিমিটার স্বাভাবিক রক্তচাপকে ১২০/৮০ এভাবে প্রকাশ করা হয়। স্ফিগমোম্যানোমিটার নামক যন্ত্রের সাহায্য রক্তচাপ নির্নয় করা হয়।

উচ্চরক্ত চাপ কি

উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) এমন একটি অবস্থা যেখানে রক্তের প্রবাহ ধমনীতে অত্যধিক চাপ সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী একটি সমস্যা এবং সময়মতো নিয়ন্ত্রণ করা না হলে মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে: প্রাথমিক (আবশ্যিক) এবং গৌণ। প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপ সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে। অন্যদিকে, গৌণ উচ্চ রক্তচাপ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন কিডনি রোগ, থাইরয়েডের সমস্যা, বা কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে হয়।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ অনেক সময় স্পষ্ট হয় না, তাই একে "নীরব ঘাতক" বলা হয়। তবে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, বা নাক দিয়ে রক্ত পড়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, ওজন বৃদ্ধি, ধূমপান, এবং মানসিক চাপ উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে হার্ট-বিট বা পালস গণনার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং উপকৃত হতে পেরেছেন। এ রকম আরো তথ্য মূলক পোস্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা সবসময় পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী পোস্ট পাবলিশ করে থাকি। এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url