হ্যাকিং কি? - হ্যাকিং কাকে বলে? বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে হ্যাকিং কি বা কাকে বলে এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আপনি যদি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে হ্যাকিং কি বা কাকে বলে তা বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
হ্যাকিং কি? - হ্যাকিং কাকে বলে? বিস্তারিত জেনে নিন
আমরা জানি সমাজ ও আইন বিরোধী যে কোনো কর্মকাণ্ডই অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। তবে যেসব অপরাধ অনলাইন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে হয়ে থাকে সেগুলোকে সাইবার অপরাধ বলে। সাইবার অপরাধ সংঘটনে কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট অবশ্যই ব্যবহৃত হয় আবার কখনো কখনো ডিভাইস বা নেটওয়ার্ক নিজেই সাইবার আক্রমণের শিকার হয়। 

সাইবার অপরাধীরা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে আমাদের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে ফেলতে পারে। তাই সাইবার অপরাধ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা বিষয়ক ঝুঁকি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার উপায় সম্পর্কে জানা আমাদের সকলের জন্য অতি জরুরি। ডিজিটাল মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধ হয়ে থাকে, যার মাধ্যমে তথ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। পোস্ট সূচিপত্র

হ্যাকিং কি বা কাকে বলে

সাধারণত অনুমতি ব্যতীত কোনো ওয়েবসাইট বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে তা ব্যবহার করা অথবা তার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়াকে হ্যাকিং বলে। যে হ্যাকিং করে তাকে হ্যাকার বলা হয়। হ্যাকিং বৈধ ও অবৈধ হতে পারে। কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের সিস্টেমের সিকিউরিটি পরিক্ষা-নিরীক্ষা জন্য হ্যাকার নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এই নিয়োগ প্রাপ্ত হ্যকারদের কাজকে বৈধ হ্যাকিং বলে। 

এরা সিস্টেম সিকিউরিটি চেক করে তবে সিস্টেমের কোন ক্ষতি করে না। যেমন-UNIX সিস্টেম চেক করার জন্য অনেক বৈধ হ্যাকার রয়েছে। এদেরকে হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার বলা হয়। অবৈধভাবে যারা হ্যাকিং করে তাদেরকে ক্রেকার ও বলে। অবৈধ হ্যাকার বা ক্রাকাররা ইন্টারনেট এবং অন্যান্য নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ডেটা চুরি অথবা নষ্ট করে দেয়। 
এদের কাছে সাধারণত বেশ কিছু টেকনিক থাকে যা ব্যবহার করে এরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সফটওয়্যার সিস্টেমের দুর্বলতা খুব সহজেই ক্ষতি সাধন করতে পারে। এদেরকে ব্লাক হ্যাট হ্যাকার বলে। হ্যাকিং অপরাধের প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলছে। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ সংঘটিত হয়। হ্যাকাররা অন্যের ই-মেইল দেখতে পারে, ওয়েব সার্ভারে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে পারে অথবা নেটওয়ার্ক ফাইল চুরি করতে পারে।

ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক কাকে বলে

বাস্তব জীবনে একজন চোর যেমন একটি তালা বদ্ধ রুমে প্রবেশ করার জন্য বিভিন্ন রকম চাবি দিয়ে সেই তালা খোলার চেষ্টা করে তেমনি ডিজিটাল মাধ্যমে অপরাধীরা মানুষের বিভিন্ন রকম অ্যাকাউন্ট যেমন ব্যাংক, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইমেইল অ্যাকাউন্ট, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইসেও অবৈধভাবে প্রবেশ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবাহার করে এবং ঐ গুলো নিয়ে একের পর এক অনুমান নির্ভর চেষ্টা করে। মাঝে মাঝে তারা সফলও হয় এবং সফল হলে তারা ঐ ব্যক্তির বিভিন্ন তথ্য চুরি করে। 

ঐ চুরি করা ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে থাকে। এটি এক ধরনের সাইবার আক্রমণ যা অবশ্যই একটি গুরুতর সাইবার অপরাধ। এই ধরনের সাইবার হামলা ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক নামে পরিচিত। এটি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে একন আক্রমণকারী কোন সিস্টেমে অনুমতি ছাড়া অ্যাক্সেস পাওয়ার জন্য সম্ভাব্য সমস্ত পাসওয়ার্ড বা এনক্রিপশন কি-গুলোর বিভিন্ন সংমিশ্রণ নিয়ে পদ্ধতি গতভাবে চেষ্টা করে। 

এটি ট্রায়াল এবং এরর এর উপর নির্ভর করে স্বয়ংক্রিয় সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে সঠিকভাবে প্রতিটি বিকল্প খুঁজে সফল না হওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে চেষ্টা চালিয়ে যায়। এটি প্রতিরোধ করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন শক্তিশালী করতে হবে তেমনি পাসওয়ার্ড ব্যবস্থাও শক্তিশালী করতে হবে।

ডেটা ইন্টারসেপশন কাকে বলে

কৃষিকাজের জন্য জমিতে পানি সেচ দেওয়ার অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত পানির পাষ্প থেকে জমি বা ক্ষেত এ নালা করে অথবা পাইপের সাহায্যে পানি দেওয়া হয়। এই নালা বা পাইপের মাঝপথে যদি কেউ তা কেটে দেয় অথবা পানির পাইপটি ফুটো করে দেয়, তাহলে যে পরিমাণ পানি পাওয়ার কথা তা পাওয়া যাবে না। 
এর ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। নালার মাঝপথে যেমন কিছু অসাধু মানুষ পাইপ ফুটো করে তাদের স্বাস্থ্য হাসিল করে তেমনি ডিজিটাল উপায়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি প্রেরক এবং প্রাপকের মাঝখানে বসে থেকে ডাটা চুরি করে এবং ব্যবহার কারীকে ক্ষতিগ্রস্থ করে তাকে ডেটা ইন্টারসেপশন বলে।

ডি ডস আক্রমণ কাকে বলে

ডি-ডস (DDoS) আক্রমণ, যা পূর্ণরূপে "Distributive Denial of Service" আক্রমণ হিসেবে পরিচিত, একটি ধরনের সাইবার আক্রমণ যেখানে একাধিক কম্পিউটার বা ডিভাইসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট টার্গেটের ওয়েবসাইট বা সার্ভিসে অতিরিক্ত ট্রাফিক পাঠানো হয়। এর মূল লক্ষ্য হল টার্গেট সাইটের সার্ভিস অকার্যকর বা বিপর্যস্ত করা, যাতে সাধারণ ব্যবহারকারীরা সাইটে প্রবেশ করতে না পারে। 

এই আক্রমণটি সাধারণত হ্যাকাররা 'বটনেট' ব্যবহার করে পরিচালনা করে, যা একাধিক ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত ডিভাইসের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ডি-ডস আক্রমণে সাইটে একযোগভাবে অনেক রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়, যার ফলে সার্ভারগুলি অতিরিক্ত লোডে পড়ে এবং কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এই আক্রমণটি সাধারণত প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট, অনলাইন সার্ভিস বা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে বড় ধরনের ক্ষতি করতে সক্ষম।

সাইবার বুলিং কাকে বলে

সাইবার বুলিং হল একটি ধরনের শারীরিক বা মানসিক অত্যাচার, যা ইন্টারনেট বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করা হয়। এটি সাধারণত সামাজিক মিডিয়া, চ্যাট রুম, ফোরাম বা গেমিং প্ল্যাটফর্মে ঘটে, যেখানে একজন ব্যক্তি বা একটি গ্রুপ অন্য একজনকে হেয় প্রতিপন্ন, অপমানিত বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। সাইবার বুলিংয়ের মধ্যে রয়েছে মানসিক নির্যাতন, মিথ্যা গুজব রটানো, হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো, ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা বা আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া। 
এই ধরনের আক্রমণ শিকারদের জন্য মানসিক যন্ত্রণা এবং আঘাত সৃষ্টি করে, যা তাদের আত্মবিশ্বাস কমাতে, বিষণ্ণতা বা উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়ার কারণে অনেক সময় ব্যক্তির জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন আত্মহত্যার চিন্তা বা সামাজিকভাবে অবহেলিত হয়ে পড়া। এজন্য এটি একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠেছে, যা সমাধান এবং সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা জরুরি

উপসংহার

প্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে হ্যাকিং কি বা কাকে বলে এই টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং উপকৃত হতে পেরেছেন। এ রকম আরো তথ্য মূলক পোস্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা সবসময় পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী পোস্ট পাবলিশ করে থাকি। এই পোস্টটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url