ঢাকা শহরে যানজটের কারণ ও প্রতিকার প্রতিবেদন বিস্তারিত জেনে নিন
ঢাকা শহরে যানজটের কারণ ও প্রতিকার প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম: ঢাকা শহরে যানজটের কারণ ও প্রতিকার
সরেজমিনে তদন্তের স্থান: মালিবাগ
প্রতিবেদন তৈরির সময়: বিকাল ৩ টা
প্রতিবেদন তৈরির তারিখ: ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা: সুজন মাহমুদ
বিষয়: ঢাকা শহরে যানজটের কারণ ও প্রতিকার।
ঢাকা শহরে অসহনীয় যানজট
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম মহানগর। দেশের প্রশাসনিক, বাণিজ্যিক ও শিক্ষাকেন্দ্র হওয়ায় প্রতিদিন লাখো মানুষের যাতায়াতের কেন্দ্রবিন্দু হলো ঢাকা। কিন্তু অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও বিভিন্ন সমস্যার কারণে ঢাকা শহরে যানজট এখন একটি মারাত্মক সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
গতিশীল বিশ্বে সবই গতিময়। আর গতিই জীবন, গতিশীল বিশ্বে সকল দেশের উন্নতি নির্ভর করে তার যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর, অর্থাৎ যানবাহনের উপর। একটি দেশকে উন্নত করতে হলে তার যানবাহনের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরে যেভাবে যানজট সৃষ্টি হয় তা কেউ তাদের স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে স্কুল, কলেজে, হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে না। ঢাকা শহরে যানজটের বদৌলতে জীবনযাত্রা একেবারেই অচল হয়ে পড়ে। বর্তমানে সারাদেশেই যানজট হয় তবে ঢাকা শহরের যানজট তীব্র ও প্রকট।
ঢাকা শহরের আয়তন ৩৪৩ বর্গ কি.মি। ২৫ ভাগ রাস্তা থাকার কথা থাকলেও তা নেই। আবার যেটুকু আছে তা হকারদের দখলে, না হয় টেম্পো স্ট্যান্ড, অথবা রিকশার কাছে জিম্মি। তা ছাড়া রয়েছে ফলের দোকান, ট্রাক স্ট্যান্ড ইত্যাদি রাস্তা দখল করে নিচ্ছে। তাই তো যানজট। তার উপর যখন তখন বিভিন্ন সংস্থার লোকজন এসে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এই তো ঢাকা শহরের অবস্থা। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য সবাই আশা করছি।
যানজটের কারণ
১. অপরিকল্পিত নগরায়ণ: সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই রাস্তা ও ভবন নির্মাণের ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
২. অতিরিক্ত যানবাহন: সড়কের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি।
৩. অদক্ষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা: ট্রাফিক সিগন্যালের ত্রুটি ও পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশের অভাব যানজট বাড়ায়।
৪. অবৈধ পার্কিং: রাস্তার পাশে ও ফুটপাতে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে রাস্তা সংকুচিত হয়।
৫. রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজ: দীর্ঘদিন ধরে চলা উন্নয়নকাজ যান চলাচল ব্যাহত করে।
৬. জনসচেতনতার অভাব: ট্রাফিক আইন না মানা ও নিয়ম ভঙ্গ করা যানজটের অন্যতম কারণ।
যানজটের প্রতিকার
১. ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করতে হবে।
২. রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
৩. লাইসেন্সবিহীন রিকশা তুলে দিতে হবে।
৪. ট্রাক চলাচলে সময় নির্ধারন করে দিতে হবে।
৫. ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে।
৬. যানজটের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
৭. বিভিন্ন সংস্থার কাজের সমন্বয় সাধন করতে হবে যাতে যখন তখন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি না করতে হয়।
৮. বড় বড় জোড়গুলোতে ওভার ব্রিজ তৈরি করতে হবে।
৯. অফিস, বড় বড় মার্কেটের গাড়ি পার্কিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন: আধুনিক ও দীর্ঘমেয়াদি নগর পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
১১. গণপরিবহন উন্নয়ন: বাস, মেট্রোরেল ও অন্যান্য গণপরিবহন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ।
১২. ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন: স্মার্ট ট্রাফিক সিগন্যাল ও প্রশিক্ষিত ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ।
১৩. আইন প্রয়োগ: অবৈধ পার্কিং ও ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা।
১৪. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: গণমাধ্যম ও শিক্ষার মাধ্যমে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি।
১৬. রাস্তা ব্যবস্থাপনার উন্নতি: দ্রুত ও পরিকল্পিতভাবে রাস্তা নির্মাণ ও মেরামত কাজ সম্পন্ন করা।
আসলে ঢাকা শহরে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে যানবাহন ও মানুষ বেশি হয়েছে। তাই প্রশাসনকে বিকেন্দ্রীকরণ করার কোনো বিকল্প নেই। প্রয়োজনে উপশহর গড়ে তুলতে হবে। তাহলে আমরা কিছুটা হলেও মুক্ত হতে পারি যানজট থেকে।

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url